ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর উপায় কি? বহুল আলোচিত এবং জিজ্ঞাসিত এই প্রশ্ন নিয়েই আজকের এই মেগা পর্ব। আমাদের আজকের এই মেগা পর্বটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে এখানেই এ সব কিছুর উত্তর পেয়ে যাবেন আশা করি।
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার উপায়সমূহ বিস্তারিতভাবে জানার পূর্বে ট্রাফিক সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক পথে ‘ট্রাফিক’ বলতে যেমন রাস্তাঘাটের যানবাহন এবং চলাচল করা মানুষের সংখ্যাকে বোঝানো হয়, তেমনই ওয়েব ট্রাফিক বলতে কোনো ওয়েবসাইটে ঘুরতে আসা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মোট সংখ্যাকে বোঝানো হয়ে থাকে। সহজ কথায়, ওয়েব ট্রাফিক হলো কোনো ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আসা মোট মানুষের সংখ্যা।
যেকোনো ওয়েবসাইটের সফলতা নির্ভর করে ওয়েবসাইটে ভিজিটর সংখ্যার উপর। যে ওয়েবসাইটে ভিজিটর যত বেশি, তার বিজ্ঞাপনে ক্লিকের সংখ্যাও তত বেশি এবং অবশ্যই উপার্জনের মাত্রাও সমানুপাতিক হারে উর্ধ্বগামী। তাই সকল ব্লগারের মূল উদ্দেশ্যই থাকে ওয়েবসাইটে সর্বাধিক পরিমানে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনা।
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর উপায় সাধারনত চারটি –
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার এই চারটি উপায় সম্পর্কেই এখানে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
ডিরেক্ট ভিজিট
সরাসরি ব্রাউজারের URL Address এ কোনো ওয়েবসাইটের লিংক লিখে ভিজিট করাকে ডিরেক্ট ভিজিট বলে। একটি ওয়েবসাইটে এভাবে ভিজিট করা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মোট পরিমানকে বলা হয় ডিরেক্ট ট্রাফিক।
আপনি যদি ব্লগিং এর দুনিয়ায় নতুন হয়ে থাকেন, তবে এই পদ্ধতিতে কখনোই বেশি ট্রাফিক পাওয়ার আশা করবেন না। কারন, যেহেতু মানুষ আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানাই জানে না, সরাসরি লিংক লিখে আসবে কিভাবে! তারপরও কিছু টেকনিকের মাধ্যমে এভাবে ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব। যেমনঃ
- আপনার ওয়েবসাইটটির নাম মুখে মুখে প্রচার করুন : না, মাইক কাঁধে নিয়ে রাস্তার বেরিয়ে পড়তে বলছি না। আপনার আশেপাশের মানুষদের সাথে কথা বলার সময় বেশ কয়েকবার ওয়েবসাইটের নাম নিন। তাকে ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আহ্বান করুন। বার বার এক জিনিসের নাম নিলে এমনিতেই সেটা তার মাথায় ঢুকে যাবে।
- বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং করতে পারেন : একজন বাংলাদেশী হিসেবে এটা শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে। কারণ ব্লগের ব্যাপারে এদেশের মানুষের ধারণা খুবই সামান্য৷ কিন্তু অন্য উন্নত দেশেগুলিতে পোস্টারিং, ওয়েবসাইটে ডিরেক্ট ট্রাফিক আনার অন্যতম সাধারণ একটি মাধ্যম। ওয়েবসাইটের ব্যাপারে যদি আপনার বড় কোনো উদ্দেশ্য ও টাকা খরচ করার মানসিকতা থাকে, তবে এটা ট্রাই করতে পারেন।
- বিজনেস/ভিজিটিং কার্ডঃ আপনার বিজনেস/ভিজিটিং কার্ড থাকলে সেটায় ওয়েবসাইটের ঠিকানা যুক্ত করে দিন। ওয়েব সাইটের পেজ ভিউ বাড়াতে এটি খুব কার্যকরী একটি পদ্ধতি।
- আপনার ওয়াইফাইয়ের নাম ওয়েবসাইটের নামে ইডিট করে দিতে পারেন। এতে করে আপনার আশে পাশের মানুষ ও আপনার ওয়েব সাইট সম্পর্কে জানতে পারবে।
রেফারেল ভিজিট
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার জন্য রেফারেল ভিজিট ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কোনো ওয়েবসাইটে থাকা আপনার ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক করে যদি কেউ আপনার ওয়েবসাইটে চলে আসে, তাহলে একে রেফারেল ভিজিট বলে। আর এভাবে ভিজিট করতে আসা মোট ভিজিটরের সংখ্যাকে বলা হয় রেফারেল ট্রাফিক।
বেশিরভাগ নতুন ব্লগাররা নিজেদের ওয়েবসাইটে এভাবেই প্রচুর পরিমানে ট্রাফিক নিয়ে আসছে। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনার অন্য যেকোনো উপায়ের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি প্রযুক্তি কিংবা অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত হয়ে থাকে, তবে রেফারেল ট্রাফিক আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিৎ।
ওয়েবসাইটে রেফারেল ভিজিটর বাড়ানোর উপায়
১। গেস্ট পোস্টিং করুন –
নিজের ওয়েবসাইটের পাশাপাশি অন্য ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পোষ্ট করাকে গেস্ট পোস্টিং বলে। শুধু আর্টিকেল লিখলেই হবে না, আর্টিকেলে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকও ঢুকিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে কখনোই আপনার ওয়েবসাইটের মেইন লিংক দিবেন না। হোমপেইজের লিংক দিলে সার্চ ইঞ্জিনগুলো এটাকে ভালো চোখে না ও দেখতে পারে। যে আর্টিকেলটা লিখছেন, সেই আর্টিকেলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো লেখা আপনার ওয়েবসাইটে আগে থেকেই আছে কিনা– দেখুন। থাকলে সেই লেখাটির লিংক ঢুকিয়ে দিন।
অন্যের ব্লগে লিখার সময় যতটুকু সম্ভব সুন্দর করে মনের মাধুরি মিশিয়ে লিখার চেষ্টা করুন। কারন, আপনার লেখার মাধ্যমে ভিজিটররা কিছু শিখতে পারলে তবেই তারা আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাপারে কৌতুহলী হয়ে উঠবে। ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার জন্য এটি খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি।
২। গেস্ট পোস্টিং এর সুযোগ দিন –
আপনি যেমন অন্যের ব্লগ বা ওয়েব সাইটে আর্টিকেল লিখছেন ঠিক তেমনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটেও অন্যদের লেখা-লেখির সুযোগ করে দিন। এর মাধ্যমে ভিজিটররা নিজেদের লেখা আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে পারবে। ফলে নিজের লিখাটি পড়ানোর জন্য সে তার বন্ধুদের কাছে তার লিখার লিংক ছড়িয়ে দিতে পারে। যদি সত্যিই ছড়িয়ে দেয়, তবে লাভটা কিন্তু আপনারই।
৩। নলেজ শেয়ারিং প্লাটফর্ম –
কোরা, বেশতো, বিষ্ময়সহ জনপ্রিয় প্রশ্ন উত্তর ওয়েবসাইটগুলোতে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করুন। আপনার উত্তরটিকে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় হতে হবে। উত্তরের ভেতর আপনার ওয়েবসাইটের কোনো আর্টিকেলের লিংক ঢুকিয়ে দিতে ভুলবেন না। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনা থেকে শুরু করে সাইটের পরচিতির জন্য এই প্লাটফর্ম গুলো খুবই কার্যকরী।
৪। অন্যান্য ওয়েবসাইটের কমেন্টলিস্টের উত্তর –
অনলাইনে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেগুলোতে এ্যাডমিনরা তাদের ভিজিটরদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মতো সময় পায় না। আপনি চাইলে এর সুযোগ নিতে পারেন। যেসব ভিজিটরের প্রশ্ন উত্তরহীন দেখবেন, সুন্দর করে উত্তর দেবেন। তবে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। সরাসরি আপনার ওয়েবসাইটে ঘুরতে আসার জন্য কাউকে আহ্বান জানাবেন না। কৌশল খাটাতে হবে। ‘আমার ওয়েবসাইটে ঘুরে আসুন’ টাইপ কথা না লিখে ‘বিস্তারিত জানুন’ লিখতে পারেন। মোটকথা, ডিরেক্ট টাইপের স্প্যাম করা থেকে দূরে থাকবেন।
সার্চ ইঞ্জিন বা অর্গানিক ট্রাফিক
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্গানিক ট্রাফিক। সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে কোনোকিছু সার্চ করার পর কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইটটির কোনো কনটেন্ট সার্চলিস্টে খুঁজে পায় এবং সেখানে ক্লিক করে আপনার ওয়েবসাইটে ঢুকে পড়ে, তবে এধরণের ভিজিটকে অর্গানিক ট্রাফিক বলা হয়। কোনো ওয়েবসাইটে এভাবে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে আসা মোট ভিজিটরদের অর্গানিক ভিজিটর বলে।
অর্গানিক ট্রাফিক এর জন্য আপনাকে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করতে হবে। আপনি যে কোনো উদ্দেশ্যই ব্লগিং করেন না কেন হোক সেটা গুগল এডসেন্স অথবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং উভয় ক্ষেত্রেই সার্চ ইঞ্জিন তথা অর্গানিক ট্রাফিক এর গুরুত্ব অপরিসীম। যে কোনো প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইটের মোট ট্রাফিকের একটি বড় অংশই নির্ভর করে অর্গানিক ট্রাফিকের উপর।
সার্চ ইঞ্জিনগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের কনটেন্টের মাঝে তুলনা করে সেরা কনটেন্টগুলোকে সার্চ লিস্টের প্রথম দিকে উঠিয়ে আনে। সার্চ ইঞ্জিনে একবার র্যাংক করতে পারলে বহুদিন পর্যন্ত নিয়মিত ভিজিটর পাওয়া সম্ভব। এভাবে প্রচুর সংখ্যক ট্রাফিকের হাতছানি পেতে ব্লগাররা তাদের কনটেন্টকে এসইও উপযোগী করে তৈরীর চেষ্টা করে।
সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করে অর্গানিক ট্রাফিক জেনারেট করার জন্য কোন কোন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ওয়েবসাইটে অর্গানিক ভিজিটর বাড়ানোর উপায়
১। Webmaster এ সাইট যুক্তকরনঃ
আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিনগুলো থেকে অর্গানিক ট্রাফিক আনার জন্য এটি সর্ব প্রথম ধাপ। খুবই সতর্কতার সাথে সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট ইন্ডেক্স করুন। ওয়েবসাইট ইনডেক্স করার জন্য জনপ্রিয় তিনটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে Google Search Console, Bing webmaster, Yandex Webmaster। বাংলা ওয়েবসাইট এর জন্য Google Search Console যথেষ্ট তবে আপনি চাইলে Bing webmaster রে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট ইনডেক্স করতে পারেন। কারণ বর্তমানে Bing সার্চ ইঞ্জিন এর ব্যবহার বাংলাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কিভাবে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট Google Search Console এর সাথে যুক্ত করবেন তা বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
২। On-Page SEO –
সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে কনটেন্টের অন পেইজ এসইও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর আনার জন্য আপনাকে অবশ্যই On-Page Seo সঠিক ভাবে করতে হবে। আপনার কনটেন্ট যতই ভালো হোক, সেটায় অনপেইজ এসইও না করা থাকলে পুরো কষ্টই মাটি। অন পেইজ এসইও এর জন্য কিছু কিছু বিষয় মাথায় রেখে আর্টিকেল লিখতে হয়, যেমন–
- মনে মনে একটা ফোকাস কিওয়ার্ড নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী আর্টিকেল লেখা।
- টাইটেল এবং পোস্টের Url এ ফোকাস কিওয়ার্ডটা রাখা।
- আর্টিকেলের শুরুর প্যারাগ্রাফ এবং শেষ প্যারাগ্রাফে ফোকাস কিওয়ার্ড যুক্ত করা।
- আর্টিকেলে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন রকম হেডিং ( H2, H3, H4) ব্যবহার করা। তবে H1 ব্যবহার না করাই উত্তম। কারণ আর্টিকেলের টাইটেল অটোমেটিকভাবে H1 ফরমেটে চলে আসে। আর একটা পেইজের জন্য একটাই H1 হেডিং যথেষ্ট।
- কয়েকটা হেডিং এ ফোকাস কিওয়ার্ড বসিয়ে দেয়া।
- প্রতিটি আর্টিকেলে কমপক্ষে একটি ছবি যুক্ত করা এবং সেটার AlT ফিল্ডে ফোকাস কিওয়ার্ড রাখা।
- প্রতিটি আর্টিকেলের ডেসক্রিপশন বক্সে সর্বনিন্ম এক এবং সর্বোচ্চ দুইবার ফোকাস কিওয়ার্ডটি যুক্ত করা।
৩। কিওয়ার্ড রিসার্চ –
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে কিওয়ার্ড রিসার্চ।পাঠক এবং লেখকের উভয়ের ক্ষেত্রেই একটি ব্লগ বা আর্টিকেল এর শুরু হয় কিওয়ার্ড দিয়ে। যেমন একজন লেখক সর্বপ্রথম কিওয়ার্ড নির্বাচন করার মাধ্যমে তাঁর লেখার বিষয়বস্তু তৈরি করছে, আবার অন্যদিকে একজন পাঠক সেই কিওয়ার্ড দিয়েই গুগলে সার্চ করছে তার কাঙ্খিত ফলাফল এর জন্য।
সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ এর গুরুত্ব অপরিসীম। একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মূল সম্পদ হচ্ছে অর্গানিক ট্রাফিক বা ভিজিটর। আর আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচনে ব্যর্থ হন তাহলে আপনি অর্গানিক ট্রাফিক অর্জনে ব্যর্থ হবেন।
ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখার আগে কিওয়ার্ড রিসার্চ এর জন্য Google AdWords এর ফ্রী টুল Keyword Planner ব্যবহার করতে পারেন – আজকাল লোকজন কি লিখে গুগলে বেশি সার্চ করছে, কোন কিওয়ার্ডের প্রতিযোগিতা কেমন ইত্যাদি। বেশি সার্চ করা অথচ তুলনামূলকভাবে কম প্রতিযোগিতার কিওয়ার্ডগুলো বেছে নিন আপনার আর্টিকেল প্রস্তুত করার পূর্বে।
৪। Google Analytics পর্যবেক্ষণ –
একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক বিভিন্ন উপায়ে আনা যায়। ব্লগ বা ওয়েব সাইটে অর্গানিক ট্রাফিক জেনারেট করার জন্য আপনাকে On-Page SEO এর পাশাপাশি Google Analytics এর সাথে যুক্ত থেকে নিয়মিত আপনার ব্লগ সাইট পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
Google Analytics এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন –
- আপনার সাইটে দৈনিক কতজন ভিজিট করছে।
- কোন দেশ থেকে ভিজিট করছে।
- কোন ধরনের ডিভাইস দিয়ে বেশি ভিউ হচ্ছে।
- আপনার সাইটের Session Duration কত।
- আপনার সাইটের Bounce Rate কত।
Session Duration কি?
একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ট্রাফিক (অর্গানিক) আনার জন্য আপনাকে জানতে হবে গুগল এর অ্যালগোরিদম সম্পর্কে। কিভাবে একটি সাইট বা আর্টিকেল র্যাঙ্ক করে। ২০২০ সালের গুগল অ্যালগোরিদম অনুযায়ী ধারনা করা হয়, গুগলে একটি আর্টিকেল বা ভিডিও র্যাঙ্ক করে Watch Time বা Session Duration এর উপর ভিত্তি করে। এই ধারনাটি গুগল নিজেও পাবলিশ করেছে। অর্থাৎ কোন একজন ভিজিটর আপনার সাইটে প্রবেশ করে কতক্ষণ যাবৎ একটি আর্টিকেল পড়েছে সেটিই মূলত Session Duration।
মনে করুন আপনার সাইটের একটি আর্টিকেলে ১০ জন ভিজিটর প্রবেশ করে সকলেই এক মিনিট যাবত আপনার আর্টিকেলটি পড়েছে। তাহলে আপনার সেশন ডিউরেশন হবে ১০ মিনিট। কিন্তু দেখা গেল ১০ জন ভিজিটর প্রবেশ করে তারমধ্যে পাঁচজন ভিজিটর আর্টিকেলটি না পড়েই বের হয়ে গেল তাহলে আপনার Session Duration হবে অ্যাভারেজ ৫÷১০= .৫০ মিনিট। অর্থাৎ আপনার সাইটে ১০ জন ভিজিটর এসেছিল ঠিকই কিন্তু ৫ জন না পড়ে চলে যাওয়াই আপনার Session Duration কমে গিয়েছে।
ঠিক এভাবে আপনার সকল ভিজিটর এর এর সাথে সর্বমোট ওয়াচ টাইম ভাগ করে Google Analytics আপনার সাইটের Session Duration দেখাবে। আপনার সাইটের Session Duration যত বেশি হবে আপনার সাইটটি র্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।
Bounce Rate কি?
Bounce Rate/বাউন্স রেট হল কতজন ভিজিটর আপনার সাইট এর একটি আর্টিকেল পড়তে এসে সেখান থেকেই ফিরে গিয়েছে অর্থাৎ ওই একটি আর্টিকেল ছাড়া আপনার সাইটের অন্য কোন আর্টিকেল সে পড়েনি। Bounce Rate/বাউন্স রেট সর্বদা (%) আকারে প্রকাশ করা হয়।
মনে করুন আমি গুগল এ “ব্লগিং” সার্চ করে আপনার একটি আর্টিকেল পেলাম। অতঃপর সেই আর্টিকেলটি আমি পড়লাম ঠিকই কিন্তু সেই মুহূর্তে আপনার সাইটের অন্য কোন আর্টিকেল না পড়ে সেই একটি আর্টিকেল পড়েই ফিরে আসলাম, এটাই হলো Bounce Rate/বাউন্স রেট।
আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে, মনে করুন আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে মোট ভিজিটর যদি 1000 জন হয় এবং তার মধ্যে 500 জন যদি গুগলের সার্চ রেজাল্টে পাওয়া একটি আর্টিকেল পড়েই অন্য কোন আর্টিকেল এ ক্লিক না করে বের হয়ে আসে তাহলে আপনার ব্লগ বা ওয়েব সাইটের Bounce Rate/বাউন্স রেট হবে ৫০%।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কত Bounce Rate একটি সাইটের জন্য ভালো?
- ৩০% এর কম = খুব ভালো
- ৫৫% এর মধ্যে = ভালো
- ৫৬% – ৭০% = খুব ভালো নয়
- ৭০% এর বেশী = খুব খারাপ
অর্থাৎ আপনার সাইটের বাউন্স রেট কোন ভাবেই যেন ৫০% বা ৫৫% এর নিচে না আসে সে দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক। আর এর জন্য আপনাকে নিয়মিত Google Analytics এর সাথে যুক্ত থাকতে হবে এবং তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। Google থেকে বিস্তারিত।
৫। বেশি বেশি ব্যাকলিংক তৈরী করুন।
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক (অর্গানিক) নিয়ে আসার আরো একটি মাধ্যম হলো ব্যাকলিংক আপনার ওয়েবসাইটটি যদি নতুন হয়ে থাকে, তাহলে গুগলের কাছে এটি একদম অপরিচিত। গুগলের কাছে আপনার ওয়েবসাইটকে খুব দ্রুত অনেক বেশি ট্রাস্টেড করে তুলতে প্রচুর ব্যাকলিংক তৈরী করুন। ব্যাকলিংক তৈরী করে সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে ট্রাস্টেড হওয়ার পাশাপাশি পাচ্ছেন রেফারেল ট্রাফিকও!
গুগোল এখন পর্যন্ত বহুবার তাদের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করেছে ঠিকই, তারপরও ব্যাকলিংকের গুরুত্ব আগের মতোই রয়েছে। আপনি যখন কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কোন একটি কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করবেন তখন গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো সেই ওয়েবসাইটেই বেশি প্রাধান্য দিবে যে ওয়েবসাইটের লিংক যত বেশি ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকবে।
অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ অন্যান্য ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে গুগল অবশ্যই আপনার সাইটটিকে প্রাধান্য দিবে। সুতরাং গেস্ট পোস্টিং এর মাধ্যমে বেশি বেশি ব্যাকলিংক জেনারেট করার চেষ্টা করুন।
৬। থিম বা টেমপ্লেট নির্বাচনে সতর্কতা –
একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আসা থেকে শুরু করে ট্রাফিক ধরে রাখা পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই থিম অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুধু সুন্দর লুক দেখেই থিম পছন্দ করলে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত থিম বা টেম্পলেট যত বেশি ফাস্ট লোডিং এবং লাইট-ওয়েট হবে, আপনার সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। ব্লগ বা ওয়েবসাইটের সাথে থিমের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সহজেই নেভিগেশন করা যায় এমন থিম পছন্দ করুন। অর্থাৎ ভিজিটর যেন খুব সহজেই আপনার সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটের প্যাটার্ন বুঝতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। যেমন প্রাইমারি মেনু অ্যাড করা সাইডবারে আলাদাভাবে ক্যাটাগরির ব্যবস্থা করা এতে করে এবং আর্টিকেল এর শেষে Related Post রাখা। এতে করে ভিজিটর খুব সহজেই আপনার অন্যান্য আর্টিকেলগুলো খুঁজে পাবে। সর্বোপরি আপনার ব্যবহৃত থিমটি অবশ্যই ইউজার ফ্রেন্ডলি হতে হবে।
৭। ওয়েব সাইট স্পীড –
যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করার ক্ষেত্রে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের স্পিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে ওয়েবসাইট এর স্পিড যত বেশি গুগল সর্বদা র্যাঙ্কের ক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটকে এগিয়ে রাখে।
আপনি যদি ব্লগার প্লাটফর্মে ব্লগিং করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবিসমূহ ভালোভাবে অপটিমাইজ করবেন। ভালো কোয়ালিটির ছবি ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে হাই রেজুলেশনের ছবি ব্যবহার করা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের স্পিড মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে। যেহেতু ব্লগারে ওয়ার্ডপ্রেসের মতো কোনো প্লাগ-ইন ব্যবহার করা যায় না তাই ব্লগারের স্পিড বৃদ্ধি করার জন্য লাইট ওয়েট থিম ব্যবহার এবং ইমেজ অপটিমিজেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকেন তাহলে বিভিন্ন প্লাগিন ব্যবহার করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের স্পিড বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে প্লাগিন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে কেননা অতিরিক্ত এবং হেভি-ওয়েট প্লাগিন ব্যবহার করার মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের স্পিড স্লো হয়ে যায়।
৮। পুরোনো আর্টিকেলগুলো ইডিট করা –
এই কাজটা সার্চ ইঞ্জিনগুলো খুবই পছন্দ করে। পুরোনো আর্টিকেলের কোনো তথ্য যদি পুরোনো মনে হয়, তবে সেটা আপডেট করুন। বানান ভুল থাকলে শুধরানোর চেষ্টা করুন।
৯। গুগলে আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দিন। (পেইড)
আপনার যদি ইনভেস্ট করার ইচ্ছে থাকে, তবে গুগলে আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দিয়ে দিন। এর মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে প্রচুর ভিজিটর পাবেন। গুগলে নির্দিষ্ট কিছু কিওয়ার্ডের জন্য আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দিলে কেউ যদি ওইসব কিওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ করে, তাহলে সার্চলিস্টের প্রথমেই আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল তুলে দেবে। সবচেয়ে মজার এবং আশার ব্যাপার হলো, আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে প্রতিটি ক্লিকের জন্যই শুধু আপনাকে খরচ করতে হবে। মানে কেউ আপনার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে ক্লিক না করা পর্যন্ত আপনার কোনো খরচ হচ্ছে না।
সোশ্যাল মিডিয়া
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক এর জন্য অর্গানিক ট্রাফিক এর পর পরই সোশ্যাল মিডিয়ার অবস্থান। এডসেন্স থেকে উপার্জনের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রাফিক খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া কোন একটি ওয়েবসাইটের DA এবং PA বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রাফিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা এতে করে আপনার ডোমেইনের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।
ফেইসবুক, টুইটার, লিংকড-ইন কিংবা পিন্টারেস্টের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করা লিংকে ক্লিক করে আসা ভিজিটরদের সোশ্যাল ট্রাফিক বলা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচুর লোকের কাছে খুব সহজেই ওয়েবসাইটের কনটেন্ট পৌছে দেয়া যায়। আর এর মাধ্যমে লুফে নেয়া যায় অসংখ্য ট্রাফিক।
আপনার ওয়েবসাইটটি যদি রুপচর্চা, ফ্যাশন, রেসিপি, নিউজ, ধর্মীয় ইত্যাদি জীবনের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত বিষয়ের ওপর হয়, তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চেষ্টা করলেই প্রচুর ট্রাফিক পাবেন। তাছাড়া টেকনোলজি, ব্লগিং কিংবা এরূপ টিউটোরিয়াল টাইপ ওয়েবসাইটগুলোর জন্য ডিরেক্ট ট্রাফিক পাওয়াটা একটু কঠিন। কেননা, এগুলোর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের খুব বেশি আগ্রহ থাকে না। আর বাংলাদেশের কথা বললে তো, একদমই না। আর এই ক্ষেত্রে ও সোস্যাল মিডিয়ার জুরি মেলা ভার।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর উপায় এর ক্ষেত্রে সোস্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব কতখানি।
ওয়েবসাইটে সোশ্যাল ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর উপায়
১। মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি –
এমন কনটেন্ট তৈরী করুন যেন ভিজিটররা পড়ার পর তা নিজ থেকেই শেয়ার করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার শব্দপ্রয়োগ ও লেখনীর মাধ্যমে পাঠককে আকৃষ্ট করার ক্ষমতা থাকতে হবে। পাঠকের সাথে এক অদৃশ্য সংযোগ তৈরী করতে হবে। লেখার মধ্যে ওই বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা যুক্ত করে আপনি এই সংযোগ সৃষ্টি করতে পারেন।
২। ফেসবুক পেইজ তৈরি –
ফেইসবুকে আপনার ওয়েবসাইটের নাম দিয়ে একটি নতুন পেইজ তৈরী করুন এবং বন্ধুদের সেই পেইজে ইনভাইট করুন। পুরাতন কোনো পেইজে বেশি লাইক আছে জন্যে সেটার নাম পরিবর্তন করে আপনার ওয়েবসাইটের নামে চালিয়ে দেবেন না। মনে রাখবেন, এই যে আপনি বন্ধুদের লাইকের জন্য ইনভাইট করছেন, এই ইনভাইটেশনের সাথে সাথে আপনার ওয়েবসাইটের নামও তাদের নোটিফিকেশন চলে আসছে। পেইজে আসুক বা না আসুক, ইনভাইটেশনের জন্য সে আপনার ওয়েবসাইটের নাম জানার সুযোগ পাচ্ছে।
৩। অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট –
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিটি আর্টিকেলের একটি অংশ মোডিফাই করে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে পাবলিশ করুন। প্রতিটি আর্টিকেলের লিংক মাত্র একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেই ক্ষান্ত হবেন না। কিছুদিন পর পরই পুরোনো ভালো লিখাগুলোর কিছু অংশ ভিন্নভাবে মডিফাই করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পোস্ট করতে থাকবেন। এতে করে ফলোয়ারদের সাথে কানেক্টেড হতে পারবেন এবং ভিজিটর আসতেই থাকবে।
৪। ইমেইল মার্কেটিং –
ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটরদের ইমেইল সংগ্রহ করুন এবং ইমেইলে নতুন কনটেন্টের আপডেট জানিয়ে দিন। ওয়েবসাইটে ‘Email Subscription’ উইজেট যুক্ত করে দিন। এর মাধ্যমে যে কেউ নতুন কনটেন্টের জন্য আপনার ওয়েবসাইট সাবস্ক্রাইব করতে পারবে এবং অটোমেটিকভাবে তাদের দেয়া ইমেইলে নতুন কনটেন্টের আপডেট চলে যাবে।
৫। পেইড মার্কেটিং –
সোশ্যাল সাইটগুলোতে ওয়েবসাইটের জন্য তৈরী করা পেইজের বিজ্ঞাপন দিন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেইসবুক। ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে অন্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া অপেক্ষা বেশি ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব। ফেইসবুকের এ্যালগরিদম অনুযায়ী সাধারন পেইজগুলোর পোস্ট মোট ফলোয়ারের মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ বা তারও কম অংশের হোমপেইজে দেখানো হয়। কিন্তু আপনি যদি ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে আরো বেশি মানুষের কাছে আপনার পেইজের পোস্ট ছড়িয়ে পড়বে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষেত্রে একটি সুবিধাজনক ব্যাপার হলো বিজ্ঞাপন কোন বয়সী, কোন দেশের, কোন জেন্ডারের মানুষ দেখবে– এ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এছাড়াও,
৬। ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার জন্য, বন্ধুদের অনুরোধ করুন আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো তাদের প্রফাইলে শেয়ার করতে।
৭। ইউটিউব কিংবা ফেইসবুকে এমন অনেক Group আছে, যেখানে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করা হয়। আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিছু Group বা পেইজে যুক্ত থাকুন। সেখানে বিভিন্নভাবে স্প্যাম না করে ওয়েবসাইটের কনটেন্ট প্রচার করুন।
শেষকথা
আপনি যদি ব্লগিং এ নতুন হয়ে থাকেন, তবে ডিরেক্ট লিংকের মাধ্যমে বেশি ট্রাফিক পাবেন না। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভালো সংখ্যক ফলোয়ার পেতেও অনেক বেশি সময় লেগে যাবে। আর কনটেন্ট যতই ভালো হোক, নতুনদের জন্য গুগল কিন্তু মোটেই ‘সোনার হরিণ’ নয়। গুগলে র্যাংক করতে প্রচুর সময় লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে রেফারেল ট্রাফিকই আপনার একমাত্র ভরসাযোগ্য উপায়। অন্য ওয়েবসাইটে লিংক সেট করে ট্রাফিক আনার উপায়গুলো বার বার পড়ুন এবং আত্মবিশ্বাসের কাজে লেগে পড়ুন।
এখানে উল্লেখ করা ‘ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার উপায়’ গুলোর একটাও আপনার ওয়েবসাইটকে সার্থক করতে পারবে না যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভালো কনটেন্ট না থাকে। ভিজিটর আসবে, বিরক্ত হবে, তারপর চলে যাবে। দ্বিতীয়বার চোখের সামনে লিংক ঝুলে থাকলেও সে আর এমুখো হবে না। তাই মার্জিত কনটেন্টের বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিৎ।
ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক আনার উপায় নিয়ে পূর্নাঙ্গ একটি দিকনির্দেশনা দেয়ার চেষ্টা করেছি৷ কতটুকু সফল হলাম জানি না। শেষ করার আগে আবারো বলছি– ওয়েবসাইট যদি আপনার সাধের বাড়ি হয়, ট্রাফিক হলো আপনার নতুন পরিচিত বন্ধু। জানেনই তো, বন্ধুত্ব তৈরী করার চেয়ে বন্ধুত্ব রক্ষা করা বেশি কঠিন। তাই ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র ট্রাফিক আনার দিকেই মনোযোগ না দিয়ে ট্রাফিক ধরে রাখার দিকেও মনোযোগী হন। তাহলেই এই সেক্টর থেকে সাফল্য অর্জন সময়ের ব্যাপার মাত্র!
তথ্যবহুল ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ। আমার নতুন ব্লগ ” বিচিত্র জ্ঞান” এর ট্রাফিক বাড়ানোর উপায় খুঁজছিলাম। এই লেখাটা থেকে অনেক কিছু জানলাম।
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনুগ্রহ করে সাথে থাকবেন। 🙂
আমি কোরা থেকে আপনার ব্লগে ভিজিট করলাম। আমি নতুন ব্লগিং শুরু করেছি। আপনি যে তথ্য গুলো শেয়ার করেছেন আমি যথেষ্ট উপকৃত হলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার মুল্যবান মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ 🙂
অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে থাকবেন।
Bah darun tathyo samridhdho aapner lekha,parer lekher opekshay thuklum.
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
আপনাদের প্রেরনাই আমাদের প্রেষনা ❤️❤️
অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে থাকবেন 🙂
খুব ভালো লাগল তথ্যসমৃদ্ধ দারুণ একটা সুন্দর বিবরণ ।
আপনাকে অসংখ্যা ধন্যবাদ।
অনুগ্রহ করে সাথে থাকবেন 🙂
Khub sundor post korcen.
Thanks
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনুগ্রহ করে সাথে থাকবেন।
চমৎকার লেখা। একবোরে মনে হল ব্লগিংয়ের হুমায়ুন আহমেদ। সময় ছিলনা তারপরও পড়ে ফেললাম। হুমায়ুন স্যারের বইয়ের মত, ছাড়তে চাইলেও শেষে যেতে হয়। সে যাই হোক, ব্লগিংয়ে আমি নতুন । ইংরেজি বিষয়ে লিখছি। সাইটটি ভিজিট করার কি সময় হবে? ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিলে খুশী হব। শুভকামনা রইল।
”ব্লগিংয়ের হুমায়ুন আহমেদ” …. কখনই না ভাই।
আমি নিজেই হুমায়ুন আহমেদ বলতে অজ্ঞান।
btw… ব্লগিংএ আপনাকে স্বাগতম। যে কোন সমস্যা হলে জানাবেন।
ইনশাল্লাহ যথাসাধ্য সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। যোগাযোগ করব। শুভকামনা নিরন্তর।