ওয়ার্ডপ্রেসের প্রথম পর্বে আজকের আলোচনার বিষয় – ওয়ার্ডপ্রেস কি? কিভাবে শিখব এবং কি কি উপায়ে ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় করা যায়।
আজকের এই প্রযুক্তিগত বিপ্লবের যুগে ব্লগিং শব্দটা কে না শুনেছে! আর ব্লগিং এর জন্য সেরা প্লাটফর্ম, ওয়ার্ডপ্রেসের নাম প্রতিটি ব্লগারের হৃদয়েই আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে। ব্লগিং, ওয়েব ডেভেলপিং কিংবা আইটি বিষয়ক অন্যান্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওয়ার্ডপ্রেস তৈরি করে দিয়েছে এক যুগান্তকারী সম্ভাবনার দুয়ার। ফলস্বরুপ জয় করে নিয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সৃজনশীলতা প্রকাশকারী এক বৃহৎ সংখ্যক মানুষের ভরসা ও ভালোবাসা।
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস কি – তা সঠিকভাবে না জেনে থাকেন, ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় করার উপায়গুলো যদি আপনার কাছে ধোঁয়াটে মনে হয়ে থাকে, তবে এই লিখাটি সম্পুর্ণভাবে আপনার জন্য। ওয়ার্ডপ্রেস কি ও ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় পদ্ধতি বর্ণনার পাশাপাশি এখানে উল্লেখ করা হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য, যা হয়তো আপনি জানতেন না।
আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু –
- ওয়ার্ডপ্রেস কি? (What Is WordPress In Bangla)
- ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি?
- ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব?
- ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগে?
- ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয়।
ওয়ার্ডপ্রেস কি? (What Is WordPress In Bangla)
ওয়ার্ডপ্রেস কি? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো – ওয়ার্ডপ্রেস PHP এবং Mysql ব্যবহার করে তৈরীকৃত একটি শক্তিশালী কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS), যার মাধ্যমে কোডিং সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না রেখেও মোটামুটি ভালো মানের একটি ওয়েবসাইট বানানো সম্ভব।
আরো সহজ কথায় ওয়ার্ডপ্রেস কি সম্পর্কে বলতে গেলে, বলা যায়, ওয়ার্ডপ্রেস একটি ওয়েবসাইট তৈরীর কারখানা। এই কারখানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। এখানে যে কেউ যখন খুশি এসে ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারে। বিনিময়ে দিতে হয়না কোনো প্রকার অর্থ। PHP এবং Mysql ব্যবহারের সুযোগ থাকায় এবং ওয়ার্ডপ্রেসের কোনোরুপ হস্তক্ষেপ না থাকায় বানানো ওয়েবসাইটটা হয় প্রোফেশনাল এবং ডাইনামিক।
তবে একটা বিষয় প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভালো, ওয়ার্ডপ্রেস নিজে ফ্রি হলেও এখানে প্রবেশ করতে প্রয়োজন হয় ডোমেইন ও হোস্টিং, যা কখনোই ফ্রি নয়। ডোমেইন ও হোস্টিং ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরীর প্রথম শর্ত।
আপনি জেনে অবাক হবেন, ইন্টারনেটের প্রায় ৩৭% ওয়েবসাইটই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে তৈরী করা হয়েছে। আর ২০১৯ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী পুরো ইন্টারনেটের সেরা ১০০০০০ ওয়েবসাইটের মাঝে প্রায় ৯ শতাংশ ওয়েবসাইটই ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে তৈরীকৃত।
ওয়ার্ডপ্রেসের এই বিপুল জনপ্রিয়তার প্রধান কারন এর সহজ সরল সিস্টেম। ওয়েবসাইটের জগতে একদম নতুন মানুষরাও ওয়ার্ডপ্রেসের সিস্টেম খুব সহজেই বুঝতে পারে। এছাড়াও ওয়ার্ডপ্রেস অন্যান্য প্লাটফর্মের তুলনায় বেশি এসইও ফ্রেন্ডলি ও শক্তিশালী।
সুতরাং, আশা করি ওয়ার্ডপ্রেস কি? এই সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা দিতে পেরেছি। তাহল চলুন এবার আলোচনা করা যাক ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন সম্পর্কে।
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি? (WordPress plugin)
প্রাথমিক অবস্থায় ওয়ার্ডপ্রেসে তৈরিকৃত সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট দেখতে একই রকম হয়ে থাকে। কিন্তু আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট আপনার প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই অন্যদের থেকে আলাদা ডিজাইন এবং আলাদা কিছু ফিচার যুক্ত করতে হবে। আর এখানেই হলো প্লাগিনের কাজ।
প্লাগিন হলো মুলত এক ধরনের সফটওয়্যার যা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে ইনস্টল করে, সাইটের কার্যক্ষমতা, ফিচারস (features) বহুগুনে বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
প্লাগিনকে আপনি গুগল প্লে-স্টোরে থাকা অ্যাপ সমুহের সাথে তুলনা করতে পারেন – আমরা যেমন প্লে-স্টোর থেকে বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোড করে আমাদের অ্যানড্রয়েড ফোনে বিভিন্ন প্রকার ফিচার যুক্ত করে থাকি, ঠিক তেমনি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্লাগইন যুক্ত করার মাধ্যমে সাইটের ডিজাইন থেকে শুরু করে পারফর্মেন্স এবং বিভিন্ন ফিচার যুক্ত করতে পারি।
উদাহরন স্বরুপ বলতে গেলে, প্লাগইন ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে যে সকল কাজ করতে পারি –
- Website Speed Increase
- Website Security Increase
- Notification Option
- Email Subscription
- Author Box
- Author Profile
- Social Media Sharing Button
মোট কথা ওয়েবসাইট তৈরি করার আরো অনেক প্লাটফর্ম থাকলেও – এই প্লাগইন সুবিধা ওয়ার্ডপ্রেসকে বাকি সব প্লাটফর্ম থেকে আলাদা করেছে। যেমন ব্লগার প্লাটফর্মে ওয়ার্ডপ্রেসের মত কোন প্রকার প্লাগইন সুবিধা নেই।
ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব?
প্রথমেই বলেছি, ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণভাবে ইউজার ফ্রেন্ডলি। ওয়েবসাইটের ব্যাপারে যে কোনো লেভেলের জ্ঞান রাখা মানুষই একটু ঘাটাঘাটির মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস বুঝতে পারে। তবুও অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন, ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব?
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে একটি সাধারণ ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরী করতে চান, তবে খুব সহজেই তা করতে পারেন, কোনোরূপ অফিশিয়াল কোর্স না করেই। এক্ষেত্রে গুগল অনেক বেশি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ওয়ার্ডপ্রেসের নানা ছোট খাটো সমস্যার সমাধান ও টিউটোরিয়াল সুন্দরভাবে দেয়া থাকে। আপনি চাইলে Webangla তে থাকা ওয়ার্ডপ্রেস বিষয়ক লেখাগুলোও পড়তে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেসের খুটিনাটি সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে wpbeginer খুবই কার্যকরী একটি ওয়েবসাইট। ইংরেজী ভাষা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলেই এখানে সকল সমস্যার উত্তর পেয়ে যাবেন।
তবে যদি ওয়ার্ডপ্রেসের প্লাগিন বা থিম কাস্টমাইজেশনের মতো কাজগুলো করতে আপনি বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে HTml, Css, Php, Javascript এর মতো ল্যাংগুয়েজ আপনাকে জানতে হবে এবং সেজন্য এই বিষয়ক কোর্সে অংশগ্রহণ করা আবশ্যক। ইউটিউবের ফ্রি কোর্সের পাশাপাশি এখন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে রয়েছে প্রিমিয়াম কোর্সের সুবিধা।
থিম কাষ্টমাইজেশনের জন্য কোর্স করতে হবে কথাটা শুনে ভয় পাবার কিছু নেই। কারন কাষ্টমাইজেশনের বেসিক যে কাজ গুলো রয়েছে তা আপনি বিভিন্ন অনলাইন টিউটোরিয়াল দেখে নিজে থেকেই করতে পারবেন। তবে প্রতিযোগীদের থেকে সব সময় এগিয়ে থাকতে আপনাকে অবশ্যই ইউনিক কিছু করতে হবে। যার জন্য কোর্স কিছুটা হলেও গুরুত্ব বহন করে।
বাংলা ভাষায় কোর্সের ক্ষেত্রে ইশিখন.কম এর প্রশংসা লোকমুখে অনেক শুনেছি। আপনি চাইলেই সম্পূর্ণ ফ্রিতে ইশিখন.কম এর মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস শেখা শুরু করে দিতে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগে?
ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগে? এই প্রশ্নে আমি বলবো – মাত্র ৭ দিন। কারন ওয়ার্ডপ্রেসের ইন্টারফেস খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি। যা যে কোন এন্ট্রি লেভেলের মানুষের পক্ষে শিখে নিতে ১ সপ্তাহ এর বেশি লাগবে না।
মোট কথা, কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস সেট-আপ করবেন? আর কিভাবে আর্টিকেল পোষ্ট করবেন এবং তা মডিফাই করবেন তা সম্পর্কে জানা মাত্র অল্প সময়ের ব্যাপার। কেননা এসব কাজ শিখতে ইউটিউবে মাত্র একটি ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখলেই যথেষ্ট।
এরপর আসে, কিভাবে ওয়েবসাইটে থিম সেট-আপ করবেন, কিভাবে প্লাগিন ইনস্টল করবেন, কিভাবে ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন এই বিষয় গুলি আপনাকে একবারই করতে হবে এবং তা একবার দেখেই শিখে নিতে পারবেন।
উল্লেখ্যঃ ওয়ার্ডপ্রেসের সমস্ত কার্যক্রম গুলোর জন্য বাংলাতেই আলাদা আলাদা ভিডিও টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগে। আর চিন্তার কিছুই নেই Jsut Go Ahead Bro, আমরা তো আছিই, যে কোন সমস্যা বা যে কোন বিষয়ে জানার চাইলে নির্দ্বিধায় আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ইনশাল্লাহ যত দ্রুত সম্ভব সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় / ওয়ার্ডপ্রেস কেন শিখব
ওয়ার্ডপ্রেস অনলাইনে আয়ের কত বড় একটা উৎস – সেই সম্পর্কে অনেকেরই ধারণার ঘাটতি আছে বলে আমার মনে হয়। তাই এ সম্পর্কে একটু খোলাসা করে বলার চেষ্টা করব। ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় এর প্রধান ৩ টি উপায় হলো –
- ওয়ার্ডপ্রেস থেকে ব্লগিং এর মাধ্যমে আয়
- ওয়ার্ডপ্রেস থিম ও প্লাগইন ডেভেলপিং এর মাধ্যমে আয়
- ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়
- ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট মেইন্টেন্যান্স এর মাধ্যমে আয়
- ওয়ার্ডপ্রেস মাইগ্রেশন, মুভ বা ট্রান্সফার থেকে আয়
ওয়ার্ডপ্রেস থেকে ব্লগিং এর মাধ্যমে আয়
ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগিং এর জন্য আদর্শ একটি প্লাটফর্ম– কথাটা সার্বজন স্বীকৃত। সকল প্রকার ওয়েবসাইট তৈরীর উপযোগী হলেও ফিচারগত দিক থেকে ওয়ার্ডপ্রেস অনেকটাই ব্লগ কেন্দ্রিক। তাই ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে ব্লগিং করলে সফলতা অর্জন অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
ওয়ার্ডপ্রেসে লক্ষ লক্ষ ব্লগার ব্লগ তৈরী করে প্রতিনয়ত ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করে নিচ্ছে। বিভিন্ন প্লাগইন ও হাজার হাজার থিমের সহায়তায় ব্লগ তৈরী অনেকটাই সহজ হওয়ায় প্রতিদিন বাড়ছে ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা তৈরীকৃত ব্লগের সংখ্যা।
ব্লগের মাধ্যমে আয়ের প্রধান শর্ত হলো ভিজিটর। বেশিরভাগ ব্লগারই ভিজিটরের জন্য গুগলের উপর নির্ভরশীল। গুগল হতে অর্গানিক ভিজিটর পাওয়ার জন্য প্রয়োজন এসইও ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট ও আর্টিকেল।
ওয়ার্ডপ্রেসের বিভিন্ন প্লাগইনের মাধ্যমে খুব সহজেই এ্যাডভান্স লেভেলের আর্টিকেল এসইও করা সম্ভব৷ ব্লগের প্রতিটি পেইজকে আলাদাভাবে গুগলের কাছে এসইও ফ্রেন্ডলি হিসেবে দেখানোর সুযোগ থেকে। এছাড়াও নিরাপত্তাসহ সব ধরণের কাজ খুব সহজে সেরে ফেলা সম্ভব হয় ওয়ার্ডপ্রেসের বিভিন্ন সুবিধার মাধ্যমে। তাই যেকোনো ব্লগারের প্রথম পছন্দই থাকে ওয়ার্ডপ্রেস।
ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যারটি ফ্রি হলে ও এখানে ব্লগিং শুরু করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটি ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করতে হবে।
আরো পড়ুন – ডোমেইন কি? কিভাবে ডোমেইন নির্বাচন করবেন? হোস্টিং কি? কত প্রকার? হোস্টিং কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়। |
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ও প্লাগইন ডেভেলপিং এর মাধ্যমে আয়
একটু আগেই বলেছি, ওয়ার্ডপ্রেসে থিম ও প্লাগইন নামে দুইটা জিনিস আছে। থিম হলো ওয়েবসাইটের ডিজাইন স্ক্রিপ্ট। থিমের মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইট ডিজাইন করা হয়৷ আর প্লাগইন হলো একধরণের AddOn। এগুলোর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ছোট খাটো ফিচার যুক্ত করা হয় এবং নির্দিষ্ট অংশে ব্যবহার করা যায়।
সহজ কথায়, ওয়ার্ডপ্রেসের থিম ব্যবহার করা হয় ওয়েবসাইটের সামগ্রিক পরিবর্তনের জন্য এবং প্লাগইন ব্যবহার করা হয় ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট কোনো অংশের কাজের ক্ষেত্রে।
এসব থিম ও প্লাগইন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ডেভেলপারদের দ্বারা তৈরীকৃত। যে কেউ চাইলে থিম অথবা প্লাগইন তৈরী করা শিখে ওয়ার্ডপ্রেসে সেটা যুক্ত করার জন্য রিকুয়েষ্ট করতে পারে।
স্বাভাবিকভাবে ওয়ার্ডপ্রেসের প্রায় প্রতিটি থিম ও প্লাগিনের একটি ফ্রি ভার্সনের পাশাপাশি প্রিমিয়াম ভার্সন থাকে। ফ্রি ভার্সন ব্যবহার করে উপকৃত হলে মানুষ প্রিমিয়াম ভার্সনের দিকে হাত বাড়ায়।
এভাবেই থিম বা প্লগিনের প্রিমিয়ামশিপ বিক্রির মাধ্যমে ডেভেলপাররা মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়।
ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়
অন্যের ওয়েবসাইট তৈরি করে দেওয়ার মাধ্যমেও আপনি ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারেন। জ্বী হ্যা ঠিকই শুনেছেন, বিভিন্ন অনলাইন আউটসোর্সিং প্লাটফর্মে যেমন Upwork, Frelancer & Fiverr এ শুধু মাত্র ওয়েবসাইট তৈরির উপর অনেক কাজ পাবেন।
অনেক লোক তাদের ব্লগে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে চায় যথাযথ প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না আর তাই তারা এই কাজের জন্য ব্লগ সেটআপ পরিষেবাটি বেছে নেয়।
আপনি নিজের ওয়েবসাইটে এই ধরনের পরিষেবার বিবরন দিয়ে একটি পোর্টফোলিও তৈরি করতে পারেন। যার মাধ্যমে আপনি আপনার দক্ষতা খুব সহজেই আপনার বায়ার এর কাছে উপস্থাপন করে কাজ নিতে পারবেন।
এছাড়াও আজকাল অনেক হোস্টিং সিপ্যানেলে অন ক্লিক ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টলিং সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল হয়ে দাড়িয়েছে কয়েক ক্লিকের ব্যাপার মাত্র!
ওয়ার্ডপ্রেস মেইন্টেন্যান্স এর মাধ্যমে আয়
শুধু মাত্র ক্লায়েন্টদের ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে নয়, আপনি ক্লায়েন্টদের ওয়েবসাইট রক্ষনাবেক্ষণ করার মাধ্যমে ও ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা প্রতিদিন ওয়েবসাইট এর কার্যক্রম গুলো নিয়মিত ভাবে সম্পাদনের চাপ নিতে চান না – তারা কেবল তাদের সেবা সমুহ সম্পর্কে তথ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করতে চায়।
আপনি তাদের হয়ে তাদের ওয়েবসাইটের থিম এবং প্লাগইন আপডেট, হোস্টিং ম্যানেজমেন্ট, সিকিউরিটি এবং সিডি এন সেট আপ এর মত কাজ গুলো করতে পারেন। যার বিনিময়ে উক্ত কোম্পানি গুলো প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদান করে থাকবে।
তবে আপনি যদি এই ধরনের কাজ করতে চান তাহলে আপনার কার্যসম্পাদন সহজতর করার জন্য প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। কেননা প্লাগইন ছাড়া একই সাথে অনেক গুলো ওয়েবসাইট অপারেট করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
জনপ্রিয় কয়েকটি ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট প্লাগইন হলো –
ওয়ার্ডপ্রেস মাইগ্রেশন, মুভ বা ট্রান্সফার থেকে আয়
যত দিন যাচ্ছে, ওয়ার্ডপ্রেসের চাহিদা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। অন্যান্য প্লাটফর্ম থেকে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক মানুষ ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট ট্রান্সফার করে নিয়ে আসছে। একটা প্লাটফর্ম থেকে অন্য প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট ট্রান্সফার করাকে মূলত ওয়েবসাইট মাইগ্রেশন করা বলা হয়।
ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেট করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন, যারা ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে একদমই অপটু। একারণে প্রিয় ওয়েবসাইটটি নিজ হাতে ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেট করার ঝুঁকি গ্রহণ করতে চান না। এজন্য বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইটগুলো থেকে ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেট করতে পারে এমন ব্যক্তিদের টাকার বিনিময়ে ভাড়া করতে চান।
শুধুমাত্র অন্য প্লাটফর্ম হতে ট্রান্সফারকারীরাই নয়, হোস্টিং পাল্টানোর সময়ও অনভিজ্ঞ ওয়েবসাইট মালিকরা ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইটগুলোতে দক্ষ ব্যক্তি হাতরে বেড়ান।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট মাইগ্রেশন, মুভ বা ট্রান্সফার এর এই কাজ গুলো আপনি বিভিন্ন অনলাইন আউটসোর্সিং প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে পেতে পারেন –
- Upwork
- Freelancer
- Fiverr
এছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস শিখে নিজের প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যার মাধ্যমে ক্লায়েন্ট আপনার সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমেও কাজ দিতে পারবে। এতে করে থার্ড পার্টি কোন কোম্পানিকে আপনার উপার্জনের ভাগ দিতে হবে না।
আপনি জেনে অবাক হবেন, শুধুমাত্র ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেট করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে দক্ষ ব্যক্তিরা ঘন্টা প্রতি সর্বনিন্ম প্রায় ৪ ডলার হতে ৪০ ডলার পর্যন্ত দাবী করে থাকেন!
(আপনি চাইলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে এ কথার সত্যতা যাচাই করে নিতে পারেন।)
মনে হতে পারে, যেহেতু ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেশনের জন্য দক্ষ ব্যক্তিরা এতো পরিমান টাকা নিচ্ছে, তাহলে হয়তো কাজটা খুবই কঠিন। প্রকৃতপক্ষে, এ ধারণা ভুল। ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট মাইগ্রেট করা বাচ্চাদের কাজ বৈ আর কিছু নয়।
ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে মাইগ্রেট করতে শুধুমাত্র ২ টি জিনিসের প্রয়োজন হয়। ওয়ার্ডপ্রেস এর জিপ ফাইল এবং মাইগ্রেশন বা মুভ সহায়তাকারী একটি প্লাগইন। ওয়ার্ডপ্রেসের জিপ ফাইল বিভিন্ন ব্যাকআপ প্লাগইন ব্যবহার করতে পারবেন এবং সেই ব্যকআপ প্লাগইন ব্যবহার করেই ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট মাইগ্রেশন বা ট্রান্সফার করতে হবে।
আমি নিজে ওয়েবসাইট ব্যকআপ এবং ট্রান্সফারের জন্য UpdraftPlus প্লাগইন ব্যবহার করি।
=বিশেষ দ্রষ্টাব্য=
আপনারা হয়তবা শুনে থাকবেন. অনেকেই বলে থাকেন – কোন প্রকার কোডিং না জেনেও খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেসে প্রফেশনাল একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।
হ্যা কথাটা সত্য, তবে এখানে কথা রয়েছে ব্রাদার – নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, আপনি যদি একেবারেই নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমি বলবো – প্রথমে ব্লাগার প্লাটফর্মে ব্লগিং এর হাতে খড়ি নিয়ে নিন। কারন ব্লগিং সম্পর্কে কোন ধারনা না নিয়ে শুরুতেই ওয়ার্ডপ্রেস শুরু করলে সমস্যার বিশাল সমুদ্রে আপনার নিজেকে নিতান্তই অসহায় মনে হবে।
=শেষ কথা=
ওয়ার্ডপ্রেসের আজ প্রথম পর্বে আমরা জানতে পারলাম, ওয়ার্ডপ্রেস কি? ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি? ওয়ার্ডপ্রেস কিভাবে শিখব? ওয়ার্ডপ্রেস শিখতে কতদিন লাগে? ও ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় এর উপায় সমুহ।
ওয়ার্ডপ্রেসের পরবর্তী পর্ব গুলোতে থিম কাষ্টমাইজেশন, বিভিন্ন প্লাগইন এবং খুটিনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। অনুগ্রহ করে সাথে থাকবেন।
ভাই আমার নিজের কোন ব্লগ ওয়েবসাইট নেই,তবে লেখার প্রতি আমার আগ্রহ আছে।এখন আমি কি আপনার ওয়েবসাইটে লিখতে পারি।
অবশ্যই পারবেন তবে সেটা আলোচনার বিষয়।
অনুগ্রহ করে, আপনি আমাদের ফেইসবুক পেইজে যোগাযোগ করুন।
আপনার লিখাগুলো খুবই হেল্পফুল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ❤️
যে কোন লেখা বুঝতে সমস্যা হলে বা সংশোধন এর প্রয়োজন মনে হলে
আমাদের অবশ্যই জানাবেন।
এবং অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে থাকবেন 🙂