আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু ব্যাকলিংক কি? কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়?
গুগলের যতগুলো র্যাংকিং ফ্যাক্টর রয়েছে তার মধ্যে Backlink সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। সার্চ ইন্জিনের র্যাংকিং এ আসতে হলে আপনাকে গুগলের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
কেননা গুগল কেবল সেই সব সাইটগুলোকে র্যাংকিং দেয় যে সাইটগুলোকে সে বিশ্বাস করে। আর গুগলের এই বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ব্যাকলিংক।
এক নজরে আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু –
- ব্যাকলিংক কি?
- ব্যাকলিংক কেন প্রয়োজন?
- ব্যাকলিংক কত প্রকার কি কি?
- কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়?
- ব্যাকলিংক তৈরি করা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনা
ব্যাকলিংক কি?
ব্যাকলিংক হলো এমন একটি এক্সটার্নাল লিংক বা বহিরাগত লিংক যা অন্য কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে আপনার সাইট পেয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনার সাইটের লিংক অন্য কোন সাইটে থাকা মানে আপনার সাইটের জন্য একটি ব্যাকলিংক।
আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে, যখন অন্য কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের যে কোন স্থানে আপনার সাইটের লিংক ব্যবহার করা হবে তখন আপনি উক্ত সাইট হতে একটি Backlink পাবেন।
উদাহরন স্বরুপ বলতে গেলে, মনে করুন আপনি আপনার সাইটে অনলাইনে আয় এর উপর একটি আর্টিকেল লিখছেন। এবং উক্ত আর্টিকেলের মধ্যে আমার সাইটের লিংক ব্যবহার করে বললেন বিস্তারিত জানতে WeBangla সাইট ভিজিট করতে পারেন। তার মানে আপনার সাইট হতে আমার সাইট একটি Backlink পেলো।
আবার আপনি যদি আপনার আর্টিকেলের কোন একটি জায়গায় বা আপনার সাইটের যে কোন স্থানে আপনার ফেসবুক পেজের লিংক ব্যবহার করলেন। তার মানে ফেসবুক আপনার সাইট হতে একটি ব্যাকলিংক পেলো।
এটাতো গেলো ব্লগ সাইট থেকে ব্লগ সাইটে ব্যাকলিংক। আপনি যদি কোরা প্লাটফর্মে কোন একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সেখানে আপনার সাইটের লিংক শেয়ার করেন তাহলে আপনি কোরা থেকে ও একটি Backlink পাবেন।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে। অন্য কোন সাইট কেন আপনাকে ব্যাকলিংক দিবে?
ভালো কোন ওয়েবসাইট থেকে আপনি টাকার বিনিময়ে ব্যাকলিংক নিতে পারেন। অনেক ওয়েবসাইট টাকার বিনিময়ে পেইড ব্যাকলিংক বিক্রি করে থাকে।
আবার অন্য কোন ওয়েবসাইটের সাথে আপনি Backlink বিনিময় করতে পারেন। যেমন আপনি কোন একটি সাইটকে Backlink দিলেন এবং বিনিময়ে সেই সাইটটি আপনাকে ব্যাকলিংক দিলো।
আবার আপনার সাইট যখন খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে যাবে তখন আর আপনাকে Backlink নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কেননা তখন সাবাই এমনিতেই তাদের আর্টিকেলে আপনার সাইটটি মেনশন করবে এবং আপনি Backlink পাবেন। আবার আপনি অন্যের ব্লগে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমেও সেখান থেকে Backlink নিতে পারেন।
আশা করি ব্যাকলিংক কি এই বিষয়ে মোটমুটি ধারনা দিতে পেরেছি। তাহলে চলুন আলোচনা করা যাক ব্যাকলিংক এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।
আরো পড়ুন –
ব্যাকলিংক কেন প্রয়োজন?
মূলত একটি সাইটকে সার্চ ইন্জিনের র্যাঙ্কিং এ নিয়ে আসা এবং সাইটে অর্গানিক ট্রাফিক নিয়ে আসার জন্যই ব্যাকলিংক করার প্রয়োজন হয়।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ব্যাকলিংক এর উপকারিতা আসলে কিভাবে পাওয়া যায় বা কিভাবে ব্যাকলিংক তার কার্যকরী ভুমিকা পালন করে?
দেখুন একটি ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বা র্যাঙ্কিং সবকিছুই মূলত গুগলকে কেন্দ্র করে। আমাদের প্রয়োজন গুগল এর কাছে আমাদের সাইটটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা এবং সেখান থেকে অর্গানিক ট্রাফিক নিয়ে আসা। আর গুগলের কাছে একটি সাইটকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সবচেয়ে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে ব্যাকলিংক।
আপনি যখন ভালো অথরিটি সম্পন্ন অর্থাৎ গুগলের কাছে অলরেডী বিশ্বস্ত কোন সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিয়ে আসবেন তখন গুগল স্বাভাবিক ভাবেই মনে করবে যেহেতু ভালো অথরিটি সম্পন্ন সাইটটি আপনার সাইটটিকে ব্যাকলিংক দিয়েছে সেহেতু আপনার সাইটটিকেও বিশ্বাস করার যোগ্য। আর তখন গুগল আপনার সাইটটিকে ধীরে ধীরে র্যাঙ্কিং এ নিয়ে আসা শুরু করবে।
গুগল সার্চ রেজাল্টের সাথে সাইটের বিশ্বস্ততা কিভাবে কাজ করে এই বিষয়ে আপনাকে খুব সহজেই একটি উদাহরন দিয়ে বোঝানো যেতে পারে।
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করুন। এখানে গুগলে “how to delete facebook account” লিখে সার্চ করলে গুগল আমাকে সর্ব প্রথমে ফেসবুক সাইটেরই লিংক দেখিয়েছে। যদিও ফলাফলটিতে “Businessinsider” এবং “Howtogeek” এর মতো হাই অথরিটি সম্পন্ন সাইটের লিংক রয়েছে। এবং সেখানে ফেসবুক সাইট থেকেও অনেক বেশি তথ্য এবং অনেক বেশি ওয়ার্ড এর আর্টিকেল রয়েছে। তবুও এই রেজাল্ট দেখানোর কারন কি?
এর কারন একটাই। আর সেটা হলো বিশ্বস্ততা। এখানে গুগল চায় খুব কম সময়ের মধ্যে তার পাঠকদের নিকট ১০০% অথেনটিক তথ্য সরবরাহ করতে। আর যেহেতু কিওয়ার্ডটি ফেসবুক রিলেটেড সেহেতু গুগল মনে করছে এখানে অন্য যে কোন সাইটের তথ্য থেকে ফেসবুক সাইটের তথ্য বেশি বিশ্বাসযোগ্য।
সুতরাং এখানে Quantity বা Quality থেকে Trust অনেক বড় একটি ফ্যাক্ট।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আপনি যদি ব্যাকলিংক না করেন তবে কি আপনার সাইট র্যাঙ্কিং এ আসবে না?
উত্তরটি হলো, অবশ্যই আসবে কিন্তু সেটা একটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। কারন আপনি যখন নতুন কোন সাইট তৈরি করবেন, তখন গুগল সেই সাইটটিকে সাথে সাথে বিশ্বাসযোগ্য সাইটের লিষ্টে ফেলবে না। আপনাকে কমপক্ষে ৮-১২ মাস নিয়মিত আর্টিকেল লিখে যেতে হবে। অতপর ধীরে ধীরে গুগল আপনার সাইটটিকে র্যাংক দিতে শুরু করবে।
কিন্তু আপনার এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সময়কে সংক্ষিপ্ত করে দিতে সহায়তা করবে ব্যাকলিংক। আপনি যখন ভালো ভালো অথরিটি সম্পন্ন সাইট থেকে ব্যাকলিংক নিবেন তখন গুগলের কাছে খুব সহজেই আপনার সাইটের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার সাইটটিকে সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে র্যাংক করাতে পারবেন।
ব্যাকলিংক কত প্রকার কি কি?
যদিও একটি সাইটে বিভিন্ন প্রকার লিংক বা Backlink থাকে। তবু সকল দিক বিবেচনা করে ব্যাকলিংক মূলত দুই প্রকার –
- ডু-ফলো ব্যাকলিংক (Do-Follow)
- নো-ফলো ব্যাকলিংক (No-Follow)
এছাড়া আরো কিছু লিংক রয়েছে যা একটি সাইটের র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে সেগুলো হলো –
- ইন্টারনাল লিংক বা ইনবাউন্ড লিংক
- এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক
তবে Backlink এর এই প্রকার গুলো সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের প্রথমে লিংক জুস সম্পর্কে ধারনা রাখা প্রয়োজন। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
লিংক জুস কি?
আপনি যখন অন্য কোন সাইট থেকে ডু ফলো Backlink নিবেন তখন গুগল রোবট সেই লিংক গুলো ক্রল করবে এবং আপনার সাইটে লিংক জুস পাস করবে। এবং যত বেশি ভালো ডু ফলো Backlink এর মাধ্যমে এই লিংক জুস পাস হবে ততো বেশি আপনার সাইটের অথরিটি বৃদ্ধি পাবে।
সুতরাং এখানে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে ডু ফলো লিংকের সাহায্যে লিংক জুস পাস হয় কিন্তু নো ফলো লিংকের সাহায্যে কোন প্রকার লিংক জুস পাস হয় না।
ডু-ফলো ব্যাকলিংক (Do-Follow) কি?
ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেসে একটি আর্টিকেলে ব্যবহৃত সকল প্রকার লিংকই ডিফল্ট ভাবে ডু-ফলো (Do-Follow) হয়ে থাকে, যদি না আপনি নিজে থেকে তা No-Follow সিলেক্ট করেন। ব্যাকলিংক এর ক্ষেত্রে এক মাত্র ডু-ফলো লিংকই সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে।
যে সমস্ত লিংক এর জন্য সার্চ ইন্জিন রোবটকে Count বা Crawl করার নির্দেশ দেওয়া হয় তাদেরকে ডু-ফলো (Do-Follow) লিংক বলে।
নো-ফলো এবং ডু-ফলো এর পার্থক্যটা এখানেই – নো-ফলো লিংক সমুহ সার্চ ইন্জিন গুলো ইগনোর করে আর অপর দিকে ডু-ফলো লিংক গুলো সার্চ ইন্জিন গুলো র্যাংকিং এর জন্য ক্রল করে এবং সাইটে লিংক জুস পাস করে। অর্থাৎ ব্যাকলিংক এর ক্ষেত্রে নো-ফলো লিংকের কোন গুরুত্ব নেই বললেই চলে।
একটি ডু-ফলো লিংকের উদাহরন –
<a href=”http://www.google.com/”>Google</a>
যে কোন ওয়েবসাইট হতে ডু-ফলো লিংক নিলেই সেটা সার্চ ইন্জিন গুলোতে র্যাংকিং বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কাজে লাগবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা ভুল ওয়েবসাইট হতে ব্যাকলিংক নিলে তা র্যাংকিং এর বদলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
যে কোন ওয়েবসাইট হতে ব্যাকলিংক নেবার ক্ষেত্রে উক্ত সাইটের যে সব বিষয় পর্যালোচনা করে নিবেন –
- ওয়েবসাইটটি আপনার সাইটের সাথে রিলেভেন্ট কি না।
- উক্ত সাইটের DA (Domain Authority) এবং PA (Page Authority) ভালো কি না।
- উক্ত সাইটের SS (Spam Score) বেশি কিনা।
এ বিষয়ে সম্পূর্ন বিস্তারিত অফ পেজ এসইও এর আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।
নো-ফলো ব্যাকলিংক (No-Follow) কি?
যে সমস্ত লিংক সাইটে কোন প্রকার লিংক জুস পাস করে না , এবং সার্চ ইন্জিনকে আমরা কমান্ড দিয়ে থাকি যেন সে উক্ত লিংকটিকে Crawl না করে সে সমস্ত লিংককে নো-ফলো লিংক বলে।
আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার অ্যাফিলিয়েট লিংক সর্বদা নো-ফলো (No-Follow) হিসাবে ব্যবহার করবেন। কারন এসমস্ত লিংক গুলোর কোন প্রকার র্যাংকিং এর প্রয়োজন হয় না।
ঠিক তেমনি ভাবে, নিম্ন মানের অথোরিটি সম্পন্ন সাইট গুলোর লিংক যখন আপনি আপনার সাইটে ব্যবহার করবেন সে ক্ষেত্রে ও No-Follow কমান্ড ব্যবহার করা উচিত।
কারন আপনি যদি খারাপ বা কম অথরিটি সম্পন্ন সাইটকে ডু-ফলো লিংক দেন তাহলে গুগল ও আপনার সাইটকে সন্দেহের নজরে দেখতে শুরু করবে।
No Follow Backlink এর উদাহরন –
<a href=”http://www.google.com/” rel=”nofollow”>Google</a>
ইন্টারনাল লিংক বা ইনবাউন্ড লিংক কি?
আমরা যখন আমাদের নিজেদের আর্টিকেলের মধ্যে নিজের সাইটের অন্য কোন আর্টিকেলের লিংক ব্যবহার করি তখন তাকে ইন্টার্নাল লিংক বলে।
যেমন আমার এই আর্টিকেলটি Backlink সম্পর্কিত এবং এখানে অফ পেজ এসইও সম্পর্কে আরো একটি আর্টিকেল মেনশন করেছি, যেটি আমার এই সাইটে অন্য একটি আর্টিকেল। সুতরাং এখানে অফ পেজ এসইও এর এই আর্টিকেলটি ইন্টর্নাল লিংক হিসাবে কাজ করছে।
এক্ষেত্রে আমরা ইন্টার্নাল লিংক গুলো ডু ফলো লিংকে রাখবো যার কারনে আমাদের সাইটে গুগল থেকে লিংক জুস পাস হবে। এবং আমরা যত বেশি আমাদের সাইটের আর্টিকেল গুলোকে সাইটের অন্য আর্টিকেল গুলোর সাথে কানেক্টেড রাখবো ততো বেশি আমাদের সাইটে লিংক জুস পাস হবে।
এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক কি?
এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক হলো ইন্টার্নাল লিংক এর বিপরীত। অর্থাৎ আপনি আপনার সাইটের আর্টিকেলে অন্য কোন সাইটের লিংক ব্যবহার করলে সেটা এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক হিসাবে বিবেচিত হবে।
আরো পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে বলতে গেলে, মনে করুন আমার সাইটটি উই বাংলা এখন আমার এই আর্টিকেলে যদি আপনার সাইটের কোন লিংক ব্যবহার করি তাহলে সেটা হবে এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক।
এক্সটার্নাল লিংক বা আউটবাউন্ড লিংক এর মাধ্যমে আপনি অন্য সাইট গুলোকে Backlink দিতে পারবেন। Backlink নেবার ক্ষেত্রে যেমন সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় তেমনি Backlink দেবার ক্ষেত্রে ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। কেননা এমন কোন সাইটকে ডু ফলো Backlink দিবেন না যা নিম্ন মানের অথরিটি সম্পন্ন এবং যে সব সাইটের স্প্যামিং স্কোর বেশি। কারন এতে গুগলের কাছে আপনার সাইট তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়?
একটি সাইটের জন্য বিভিন্নভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়। যদিও এই বিষয়ে অফ পেজ এসইও আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবুও আপনাদের সুবিধার্থে কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় এই বিষয়ে সল্প পরিসরে আলোচনা করা হলো।
কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় এবং ব্যাকলিংক তৈরি করার ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়ুন –
গেস্ট পোষ্টিং –
ব্যাকলিংক তৈরি করার ক্ষেত্রে গেস্ট পোষ্টিং সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
বাংলাতে গেস্ট পোষ্টিং এর অর্থ হলো অতিথি লেখক। অর্থাৎ, আপনার নিজের লেখা আর্টিকেল যখন আপনি অন্যের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে গিয়ে পোষ্ট করবেন তখন তাকে গেস্ট পোষ্টিং বলে।
ভালো অথরিটি সম্পন্ন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে আকর্ষনীয় আর্টিকেল লিখে, উক্ত আর্টিকেলের কোন একটি জায়গায় নিজের ওয়েবসাইটের লিংক ব্যবহার মাধ্যমে সেখান থেকে ডু-ফলো ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়। এটি ব্যাকলিংক তৈরি করার সবচেয়ে কার্যকরী একটি উপায়।
প্রশ্ন – উত্তর সাইট হতে Backlink
প্রশ্ন – উত্তর সাইট গুলোতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এবং সেই উত্তর গুলোতে নিজের সাইটের লিংক ব্যবহার করার মাধ্যমে সেখান থেকে নিজের সাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করা যায়।
Quora বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয় একটি প্রশ্ন উত্তর সাইট। আপনি এখানে নির্দিষ্ট টপিক বা বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আপনার Audience কে Target করে যেমন Question করতে পারবেন, ঠিক তেমনি তাদের প্রশ্নের উত্তর ও দিতে পারবেন।
কতগুলো জনপ্রিয় প্রশ্ন – উত্তর সাইট গুলো হলো –
সোস্যাল বুকমার্কিং
সোস্যাল বুকমার্কিং হলো সোস্যাল মিডিয়া এর এমন একটি সার্ভিস যেখানে গ্রাহকগন তাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইট উক্ত সোস্যাল সাইট গুলোতে বুকমার্কিং করে রাখতে পারে। সোস্যাল বুকমার্কিং এর সাহায্যে খুব সহজেই Backlink তৈরি করা যায়।
যেমন পিন্টারেস্ট এর প্রোফাইলে আপনি আপনার সাইটটি ক্লেইম করে যুক্ত করার মাধ্যমে সেখান হতে ডু-ফলো Backlink তৈরি করা যায়।
কিভাবে পিন্টারেস্ট এর মাধ্যমে ডু-ফলো ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় তা জানতে অফ পেজ এসইও আর্টিকেলটি পড়ুন।
ফোরাম
মনে রাখবেন ফোরাম পোষ্টিং ব্যাকলিংক তৈরি করার কোন মাধ্যম নয়। বর্তমান সময়ে ফোরাম পোষ্টিং Backlink এর ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রভাব ফেলে না। তবে আপনি ভালো এবং উন্নত মানের ফোরামে আপনার একাউন্ট বা প্রোফাইলে আপনার সাইটের লিংক যুক্ত করার মাধ্যমে ভালো ব্যাকলিংক পেতে পারেন।
অনেকেই মনে করেন, ফোরামে বিভিন্ন পোষ্ট করার মাধ্যমে সেখানে ওয়েবসাইট বা ব্লগের লিংক যুক্ত করে Backlink জেনারেট করতে পারবেন। এটা সম্পূর্ন ভূল ধারনা।
তবে ফোরাম পোস্টিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটের জনপ্রিয়তা আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তাই কেলব জনপ্রিয়তার পাবার জন্য ফোরাম ব্যবহার করতে পারেন ব্যাকলিংক এর জন্য নয়।
ডিরেক্টরি সাবমিশন (Directory submission)
যে সব সাইট বিভিন্ন বিভাগ ভিত্তিক ভাবে হাজার হাজার সাইটের ঠিকানা তাদের ডিরেক্টরিতে সাজিয়ে রাখে তাদের ডিরেক্টরি সাইট বলে। আর এই ধরনের ডিরেক্টরি সাইট গুলোতে নিজের সাইট এর ঠিকানা যুক্ত করাকে ডিরেক্টরি সাবমিশন বলে।
পূর্বে সার্চ ইন্জিনের মতো এমন সুবিধা ছিলোনা বলে সেই সময়ে ডিরেক্টরি সাবমিশন ওয়েবসাইট ট্রাফিক এর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। আর যেহেতু এখন সার্চ ইন্জিনের যুগ সেহেতু ডিরেক্টরি সাবমিশনের পিছনে সময় নষ্ট না করাটাই উত্তম।
তবে আপনি যদি ভালো কোয়ালিটি সম্পন্ন ডিরেক্টরি সাইট হতে Backlink নিতে পারেন তাহলে তার একটা প্রভাব তো আপনার সাইটে অবশ্যই পড়বে।
কয়েকটি উন্নতমানের ওয়েব ডিরেক্টরি সাইট গুলো হলো –
ব্যাকলিংক তৈরি করা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনা
এখন আমি আপনাদের ব্যাকলিংক তৈরি করা সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনার কথা বলবো। যে সব কার্যক্রম গুলোকে অনেক ব্লগাররা Backlink এর জন্য করতে বলেন। তবে মনে রাখবেন আপনার অতিরিক্ত Backlink তৈরি করার অগ্রহ আপনার সাইটের ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াতে পারে।
ব্লগ কমেন্ট
ব্যাকলিংক তৈরি করা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ভুল ধারনা রয়েছে এই ব্লগ কমেন্ট নিয়ে।
উপরে আমি ডু ফলো এবং নো ফলো Backlink সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আর আপনারা বুঝতেই পেরেছের Backlink কেবল করলেই হবে না বরং অবশ্যই সেটা ডু ফলো হতে হবে। কেননা নো ফলো Backlink আপনার সাইটের র্যাংকিং এ বিন্দু মাত্র প্রভাব ফেলবে না।
আর আপনারা কি জানেন, নো ফলো ব্যাকলিংক তৈরি করা হয়েছিলো কেন?
ওয়েল, না জানলে আপনাদের জানিয়ে রাখি, মূলত ব্লগ কমেন্টের মধ্যেমে ব্যাকলিংক তৈরি করার স্প্যামিং বন্ধ করার জন্যই নো ফলো ব্যাকলিংক এর সূচনা হয়েছিলো। এখন কোন ব্লগার যদি বলে ব্লগ কমেন্ট এর মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটের Backlink জেনারেট করতে পারবেন। তাহলে আদতে বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না।
2013-2014 সাল পরবর্তী সময়ে সার্চ ইন্জিন গুলোতে আমুল পরিবর্তন এসেছে। আর এরও অনেক আগে থেকেই ব্লগ কমেন্টিং একেবারেই অর্থহীন হয়ে দাড়িয়েছে। যে সব ব্লগার Backlink এর ক্ষেত্রে ব্লগ কমেন্টকে প্রাধন্য দিয়ে থাকেন। এটাকে আমি বলবো তাদের এসইও সম্পর্কে জ্ঞ্যানের অভাব ছাড়া আর কিছুই না।
তবে জনপ্রিয় ব্লগ গুলোতে নিজের সাইটের লিংক ব্যবহার কমেন্ট করেলে সেখান থেকে ভালো পরিমান ট্রাফিক আপনি আপনার সাইটে নিয়ে আসতে পারবেন। তবে বেশি ভিজিটরের আশায় আশায় বিভিন্ন ব্লগ সাইটে গিয়ে নিজের সাইটের লিংক ব্যবহার করে কমেন্ট করলে তা আপনার সাইটের স্প্যাম স্কোর বৃদ্ধির কারন হয়ে যেতে পারে। যা আপনার সাইটের র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে মারাত্তক হুমকি স্বরুপ।
সুতরাং Backlink এর আশায় ব্লগ কমেন্ট করাটা বোকমি ছাড়া আর কিছুই না। তবে ট্রাফিক আনতে হলে তা একটি লিমিটের মধ্যে করতে হবে। মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কোন কিছুই মঙ্গলকর নয়।
ইউটিউব কমেন্ট
আমাদের মধ্যে অনেক নতুন ব্লগার Backlink এর আশায় ইউটিউবে গিয়ে ভিডিও এর নিচে কমেন্ট করে থাকেন এবং কমেন্টের শেষে তাদের সাইটের লিংক অ্যাড করে থাকেন। এটা Backlink জেনারেট করার কম্প্লিটলি ইউজলেস একটা প্রসেস।
আপনি কোন ভাবেই ইউটিউব থেকে কমেন্ট করার মাধ্যমে ব্যাকলিংক জেনারেট করতে পারবেন না। কেননা ইউটিউব এই ধরনের কোন প্রকার সুবিধা প্রদানই করে না। কেবল তাই নয় ইউটিউব নিজেই এই ধরনের লিংক রিমুভ করে দিয়ে থাকে।
তাছাড়া কোন চ্যানেলে যদি মডারেশন ফিল্টার অন করা থাকে তাহলে সেই চ্যানেলের ভিডিও গুলো থেকে ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত কমেন্ট সয়ংক্রিয় ভাবেই মুছে যায়। তাই আমি আপনাদের বলবো Backlink এর উদ্দেশ্য ইউটিউব ভিডিওতে কমেন্ট করে শুধু শুধু আপনার প্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করবেন না।
মিসলিডিং লিংক বা ইরিলেভেন্ট সাইট
ব্যাকলিংকের মূলত দুটি পার্ট থাকে যথা, অ্যাঙ্কর টেক্সট (Anchor text) এবং ইউআরএল। অ্যাঙ্কর টেক্সট সার্চ ইন্জিনকে সেই ব্যাকলিংকের কন্টেক্সট নির্দেশ করে অর্থাৎ উক্ত ব্যাকলিংক কোন বিষয়ের উপর।
আমাদের মধ্যে অনেকে আন রিলেটেড ওয়েবসাইট থেকে Backlink নেবার জন্য ভিন্ন ভিন্ন অ্যাঙ্কর টেক্সট ব্যবহার করে থাকে। যে সব সাইটের সাথে নিজের ওয়েবসাইটের কোন প্রকার সম্পর্কই থাকে না।
উদাহরন স্বরুপ বলতে গেলে, মনে করুন আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত এবং আপনি Backlink নিচ্ছেন ট্রাভেল বা ফুড রিলেটেড কোন সাইট থেকে।
কিন্তু সার্চ ইন্জিন কখনই ট্রাভেল বা ফুড রিলেটেড সাইট থেকে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইটের জন্য Backlink প্রত্যাশা করে না। বরং এই ধরনের ব্যাকলিংক আপনার কোন কাজে তো আসবেই না বিপরীতে তা আপনার সাইটের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাড়াবে।
ফোরাম পোষ্টিং
উপরেই ফোরাম পোষ্টিং সম্পর্কে অল্প আলোচনা করা হয়েছে। তবুও এই বিষয়টা আরেকটু ক্লিয়ার করা প্রয়োজন। অনেক আগে ফোরাম পোষ্টিং করে Backlink জেনারেট করার একটি প্রবনতা চালু ছিলো। কিন্তু বর্তমানে তা একে বারেই ইউজলেস।
আগে অনেক ব্লগার বিভিন্ন ফোরাম সাইটে তাদের প্রোফাইলে সিগনেচার হিসাবে তাদের ওয়েবসাইটের লিংক ব্যবহার করতো এবং যে কোন পোষ্টেই সামান্য কিছু লিখেই সেখানে সিগনেচারে তাদের সাইটের লিংক ব্যবহার করতো।
কিন্তু এটা আদতে অনেক অনেক দিন আগের কথা। আর এখন এর কথা বলতে গেলে আপনার এই ফোরাম পোষ্টিং আপনার সাইটের স্প্যাম স্কোর বৃদ্ধির কারন হয়ে দাড়াতে পারে। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করবো এই ২০২১ সালে এসে ফোরাম পোষ্টিং করে Backlink জেনারেট করার চিন্তা মাথা থেকে একেবারেই ঝেড়ে ফেলুন।
=শেষে কথা=
সুতরাং বুঝতেই পারছেন Backlink এর মূল উদ্দেশ্যই হলো গুগলের কাছে ভালো সাজা অর্থাৎ গুগলের বিশ্বাসের পাত্র হওয়া। আর গুগলের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হওয়া মানেই সার্চ রেংকিং এর রেজাল্টে টপ পজিশনে আসা।
আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞ্যান থেকে আশা করি Backlink কি? কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করা যায় এই বিষয়ে বোঝাতে পেরেছি। ব্যাকলিংক এর আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের অফ পেজ এসইও আর্টিকেলটি পড়ুন।
অনুগ্রহ করে ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এবং পরবর্তী আর্টিকেল আসা পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ, আপনার পোষ্ট গুলো থেকে অনেক কিছু শেখার আছে
অসংখ্যা ধন্যবাদ আপনাকে।
অনুগ্রহ করে সাথে থাকবেন।